শেষ

বহি লয়ে অতীতের সকল বেদনা,
ক্লান্তি লয়ে, গ্লানি লয়ে, লয়ে মুহূর্তের আবর্জনা,
লয়ে প্রীতি,
লয়ে সুখস্মৃতি,
আলিঙ্গন ধীরে ধীরে শিথিল করিয়া
এই দেহ যেতেছে সরিয়া
মোর কাছ হতে।
সেই রিক্ত অবকাশ যে আলোতে
পূর্ণ হয়ে আসে
অনাসক্ত আনন্দ-উদ্ভাসে
নির্মল পরশ তার
খুলি দিল গত রজনীর দ্বার।

নবজীবনের রেখা
আলোরূপে প্রথম দিতেছে দেখা;
কোনো চিহ্ন পড়ে নাই তাহে,
কোনো ভার; ভাসিতেছে সত্তার প্রবাহে
সৃষ্টির আদিমতারা-সম
এ চৈতন্য মম।
ক্ষোভ তার নাই দুঃখে সুখে;
যাত্রার আরম্ভ তার নাহি জানি কোন্ লক্ষ্যমুখে।

পিছনের ডাক
আসিতেছে শীর্ণ হয়ে; সম্মুখেতে নিস্তব্ধ নির্বাক্
ভবিষ্যৎ জ্যোতির্ময়
অশোক অভয়,
স্বাক্ষর লিখিল তাহে সূর্য অস্তগামী।
যে মন্ত্র উদাত্ত সুরে উঠে শূন্যে সেই মন্ত্র- ‘আমি’।

শান্তিনিকেতন
৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৫