কত বাকি?

ভেবেছ কি দিন বেশী আর আছে রে?
মনে পড়ে, কেমন ছিলে, কেমন হ’লে?
আর কি ফুটবে ফুল শুক্‌নো গাছে রে?

আগের মতন আর ত হয় না পরিপাক,
ক্রমে বেড়ে উঠছে পাকা চুলের ঝাঁক,
(কতক) দাঁত গিয়েছে প’ড়ে, যা’ আছে তাও নড়ে,
(তবু) দন্তরক্ষণ দিচ্ছ সকাল সাঁজে রে।

কত সাধ ক’রে খেয়েছ চালভাজা আর চিঁড়ে
আধসিদ্ধ মাংস খেতে দাঁতেতে ছিঁড়ে,
এখন দেখ্‌ছি, চোষ্য, লেহ্য, পেয়, ছেড়ে,
(বড়) ঘেঁস না চর্ব্ব্যের কাছে।

চস্‌মা নইলে আর তো দেখ্‌তে পাও না ভাল,
মালুম হয় না স্পষ্ট, সবুজ, নীল, কি কালো;
দু’চার ক্রোশ হাঁটিতে, পা দাওনি মাটিতে,
উড়ে গেছ ঝড়বৃষ্টির মাঝে রে!

আজ্‌কে পেটের অসুখ, কাল্‌কে মাথাধরা,
বাতের কন্‌কনানি, অর্শের রক্তপড়া,
অমায় পূর্ণিমাতে, লঘু আহার রেতে,
ঘোর আলস্য শ্রমের কাজে।

কথায় কথায় পত্নী-পুত্রের উপর রাগো,
নিদ্রা গেছে কমে, তামাকে রাত জাগো,
আছে সর্দ্দি কাসি, লাগা বার মাসই,
(বড়) কষ্টের পয়সা দিচ্ছ কবিরাজে রে।

ক্রমে তলব আস্‌ছে, তবু হ’চ্ছে না চৈতন্য,
ব’ল্লে, বল, “মর্‌ব আজই কিসের জন্য?”
হায় রে! দেহের মায়া ক’রেছে বেহায়া,
(তাই) কাঞ্চন ফেলে মজলে কাচে।

কান্ত বলে, দিন তো নাই রে ভাই জেয়াদা,
যমের বাড়ী থেকে আস্‌ছে লাল পেয়াদা,
(এই) পৌঁছায় আর কি এসে, ধরে আর কি ঠেসে,
পাঁচ ভূতের এই বোঝা, মিশায় পাঁচে রে!

সুরট-মল্লার- একতালা।