আমি প্যাকেটের নতুন একটি সিগারেটে

আজকাল ট্রেন বড়ো অনিশ্চিত অসময়,
তাই সন্দিগ্ধ বসে আছি প্রাচীন চেয়ারে।
নিদ্রার চশমা ক্রমশ পাল্টে যাচ্ছে দ্রুত
এক চোখ হতে অন্য চোখ সর্বত্র সব চোখ-
বুড়ো স্টেশনে ধবল গার্ড ধূসরতম পুলিশ।
স্বামীসহ জনৈকা সদ্যজননী সম্মুখে নির্লিপ্ত
কথাহীনতার ফোড্রাক্স সেবন কোরে অতিশয়
স্থির, ক্লান্ত চোখের পাতায় গন্তব্যের অনির্দিষ্ট
চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী ক্রমেই হোচ্ছে জমজমাট।

অংকে শায়িত শিশু নিদ্রায় নিমজ্জিত স্বামী
শুধু মেয়েটির দুটি চোখ অপলক স্থির,
নিকোটিনের ধোঁয়া আমার চারিপাশে
সুরম্য এক কারাগার করেছে রচনা অচ্ছেদ্য ব্যুহ।
য্যানো এ কয়েদখানায় কতিপয় আসামী
আমরা অনির্দিষ্টকাল ধরে মুক্তির প্রতীক্ষায়
সময়ের ক্যালেণ্ডার দেখে দেখে নিস্প্রভ-

কপালের লাল টিপে তার বাঁধা ছোট্ট সংসার
নিরবচ্ছিন্ন সান্তনা য্যানো সুখী গৃহিণী এক।

নির্নিমেষ চেয়ে থাকা লক্ষ্যহীনতায় আমি
এক লক্ষ্যকে খুঁজে খুঁজে বার্থ বারংবার, অলস
হাতে সে সরায় কপালের এলোমেলো চুল।
অতীতের স্মৃতিগুলো সযত্নে হৃদয়ের
কপাল থেকে য্যানো সরিয়ে রাখে।

কখনো ফেরায় চোখ, আমাকে দ্যাখে,
অনুভূতিহীন দেখে দেখে আবার দ্যাখে না
আকাশী লাজুক শাড়ি আঁচল ভেঙে পড়ে
কখনো। সুডোল হাতে দোলে দুখানা
চিকন সোনার চুড়ি স্নেহের কোমল দোলায়।

আমি পুনর্বার ফিরে যাওয়ার মতো আরেকবার
ফিরে যাই অতীত স্বপ্নে অথচ কোথাও
খুঁজে পাই না সিঁদুরের টিপ, প্রেমের শাঁখা।

কয়েদীর মুক্তির দিনের মতো ট্রেন হুইসেল
দিতে দিতে জানায় আগমনী নৈশব্দের দেশে।
হঠাৎ ফিরে আসা বিদ্যুতের মতো জেগে ওঠে স্টেশন
নিদ্রার সুনরোম সানগ্লাস খুলে রাখে সকলে।

স্বামীর সহযাত্রী হয়ে মেয়েটি বেরিয়ে যায়
ট্রেনের উদ্দেশ্যে পেছনে জেগে থাকে ওয়েটিংরুম।

আমি আমার প্যাকেটের নতুন একটি সিগারেটে
অগ্নিসংযোগ করি।