পুষ্পের নিবেদন

ওগো কালো মেঘ! বাতাসের বেগে
যেয়োনা, যেয়োনা, যেয়োনা ভেসে;
নয়ন-জুড়ানো মূরতি তোমার,
আরতি তোমার সকল দেশে!
আকাশের পথে ক্ষণেক দাঁড়ায়ে
পিপাসা বাড়ায়ে যেয়োনা চ’লে,
গদ গদ ভাষে কি কহ?- আভাসে
পারি না বুঝিতে, যাও গো ব’লে!
কি বেদনা, মরি, গুমরি’ গুমরি’
উঠিছে তোমার হৃদয়-দেশে?
তৃষিত ফুলের তৃষ্ণা জুড়াও
দাঁড়াও ভুবন-ভুলানো বেশে।
করুণ তোমার কালে আঁখি হ’তে
দুটি ফোঁটা জল পড়িল ঝ’রে!-
ব্যথা পাও যদি, তবে, কেন যাও?
দাও গো মোদের পরাণ ভ’রে।
আঙুর-দোলানো অলকে তোমার
লেগেছে স্বপন-বুলানো হাওয়া,
হে চির-শরণ! জীবন-মরণ!
তোমার পানে যে যায় না চাওয়া!
হের পাণ্ডুর বনভূমি আজ,
পাখীদের সুরে কত কাকুতি,
বজ্রের ভয় রাখেনা কেবল
কামিনী, কদম, কেতকী, যূথি!
ওগো কালো মেঘ! দাঁড়াও দাঁড়াও,-
বারেক দাঁড়াও যেয়োনা ভেসে,-
ধূলায় মলিন, পিপাসায় ক্ষীণ
দগ্ধ-জীবন-দিনের শেষে।
কদম আবার উঠুক্‌ পুলকি’,
কেতকী উঠক কণ্টকিয়া,
কামিনীর শাখে যে স্বপন জাগে
তাহারে সফল করগো পিয়া।
গভীর তোমার কাজল নয়নে
ছলছলি’ জল পড়িছে এসে,
তপ্ত বনানী ঢাকিছে তোমায়,-
দাঁড়াও ক্ষণেক ফুলের দেশে।