‘তান্কা’

(১)
ফাগুন এ ঠিক,
গগনে আলো না ধরে;
প্রসন্ন দিক্,
তবু কেন ফুল ঝরে?
ভাবি আর আঁখি ভরে।

কিনো।

(২)
ঝিঁ ঝি ডাকা শীত!
একা জাগি বিছানায়;
কাঁপিতেছে হৃৎ,
কাছে কেহ নাহি, হায়;
ধরণী তুষারে ছায়।

গোকু।

(৩)
দুঃখে কাঁদিনে,
নিয়তির পদে নমি,
ভয় শুধু মনে।
শপথ ভেঙেছ তুমি;
দেবতা কি যাবে ক্ষমি’?

শ্রীমতী ঊকন্।

(৪)
মুগ্ধ প্রভাত,
শিশির ঝলকে ঘাসে;
শরতের বাত
উদ্দাম ওই আসে,
সোনার স্বপন নাশে।

আসায়াসু।

(৫)
চপল সে ঠিক
দম্কা হাওয়ার মত;
জানি, তার কথা
ভুলিলেই ভাল হ’ত;-
ব্যর্থ যতন যত।

শ্রীমতী দৈনী-নো-সাম্মি

(৬)
কুসুমের শোভা
টুটে সে বৃষ্টিজলে,
রূপ মনোলোভা
তাওতো যেতেছে চলে;
আসা-যাওয়া নিলে।

শ্রীমতী কোমাচী।

(৭)

প্রবল হাওয়ায়
মেঘ ভেঙে চুরে যায়;
জ্যোৎস্না চুঁয়ায়,
চাঁদ ফিরে হেসে চায়,
আঁধার লুকায় কায়।

শাক্যো-নো-তায়ু-আকিসুকে।

(৮)
যামিনী ফুরালে
প্রভাত আসিবে, জানি;
সূৰ্য্য জাগালে,
তবু বিরক্তি মানি;-
তোমারে বক্ষে টানি।

মিচি-নোবু ফুজিবারা।

(৯)
জেলেদের জাল
দেখা নাহি যায় জলে,
এমনি কুয়াসা;-
দৃষ্টি নাহিক চলে,
‘বেলা হ’ল’ তবু বলে!

সাদায়োরি।

(১০)
রাগ কোরো না গো।
জল দেখি নয়নেতে;-
বঁধু গেছে মোর,
সুনাম বসেছে যেতে;
মন বাঁধি কোন মতে!

শ্ৰীমতী সাগামি।

(১১)
তার ব্যবহার
বুঝিতে পারি না আর;
প্রভাত বেলায়
জটা বেঁধে গেছে, হায়,
চুলে,- আর চিন্তায়।

শ্রীমতী হোরিকারা।


[‘তান্কা’ জাপানী সনেট। ইহা পাঁচ পংক্তিতে সম্পূর্ণ। ইহার প্রথম ও তৃতীয় চরণে পাঁচটি করিয়া এবং দ্বিতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম চরণে সাতটি করিয়া অক্ষর থাকে। তান্কা সাধারণতঃ অমিত্রাক্ষর হয়।]