ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখে

ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখে
সালাম বরকতের বুকে
গুলি চালায় নিষ্ঠুর বেইমানে।।

বাঙালির বাংলাভাষা
এই যে তাদের মূল ভরসা
এই আশায় বঞ্চিত হলে কি চলে
ভারত যখন স্বাধীন হলো
পাকিস্তানে চলে এলো
দেশ বিভক্ত করা হয় কৌশলে
উর্দুভাষী শোষক যারা
ধর্মের ভাওতা দিয়ে তারা
বন্দি করিল পাকিস্তানে।।

শোষকের কবলে পড়ে
ভাবনা করি অন্তরে
লাভ হলো কি পাকিস্তান পাইয়া
ধনরত্ন নেয় কলকৌশলে
ধর্মের ভাওতা দিয়ে বলে
উর্দু সবাই লও না শিখিয়া
করিবে শাসন-শোষণ
করে রাখবে পশুর মতন
ষড়যন্ত্র করল গোপনে।।

মুখের বোল কাড়িয়া নিবে
রাষ্ট্রভাষা উর্দু হবে
ঘোষণা করিল যখন
যারা বাংলামায়ের ছেলে
পরিষ্কার দিল বলে
মানব না থাকিতে জীবন
রাখতে বাংলাভাষার মান
অকাতরে দিলো প্রাণ
আমরা যে বাধা ঋণে।।

পরে তা মানিয়া নিল
রাষ্ট্রভাষা বাংলা হলো
জীবন দিল বেশ কয়েকজনে
আমরা যে বেঁচে আছি
এই বিষয়ে কী করেছি
চিন্তা কর মনে মনে
আজো বাংলার মর্যাদা নাই
এই দুঃখ কারে জানাই
ভাবি তাই বাঁধা কোনখানে।।

কৃষক মজুর নারী পুরুষ
আমরা সাধারণ মানুষ
মহাপুরুষ নাম যারা ফলায়
তাদের মন্ত্রণা নিলাম
এক সাগর রক্ত দিলাম
স্বাধীনতা পাইবার আশায়
যাদের আছে ধনমান
তারা গায় বিদেশী গান
বুঝে না দেশের জনগণে।।

অফিস আদালতে বাংলার
হয় যদি পূর্ণ অধিকার
প্রভূত্ব চলিবে কেমনে
নগন্য জঘন্য যারা
জানে না লেখাপড়া
উপায় নাই মাতৃভাষা বিনে
সরস বাঙালি যারা
বাংলাভাষা চায় না তারা
আবদুল করিম বুঝে অনুমানে।।