ফিরিয়ে দেয় না

বিকেলবেলাটা ছিল সন্ন্যাসের মতোই উদাস,
হাওয়া বিষাদের শ্লোক। ওরা
বললো তাকে, থাকো তুমি আরও কিছুকাল।
কিন্তু থাকো বললেই কি
শেষ অব্দি থাকায় যায়, তাই
চোখের তারায় তার নেচে ওঠে সমস্ত জীবন।
গ্রন্থপাঠে অক্লান্ত সে। শহরের অলি গলি, নিজের গ্রামের অশত্থের আর
প্রাচীন দীঘির কাছে, ঝাঁক ঝাঁক টিয়ের নিকটে
স্বীকার করেছে ঋণ। জানে সে
পিছনে যা থেকে যায় তার প্রতি টান
কমে না কখনও বা চোরা টানে
গেছে ভেসে, বুঝিবা তলিয়ে, কোনোমতে মাথা জেগে ছিল জলে;
সত্যের খোঁজে সে কুয়াশায়
জড়িয়ে পড়েছে বারংবার।
কিছুকাল ধ’রে দেখতো সে প্রায়শই অস্পষ্ট মুখোশ-আঁটা
নিষাদের স্বপ্ন; ভয় পেয়ে মধ্যরাতে
ঘুম ভেঙে গেলে পারতো না ডুবে যেতে
ঘুমের গহনে আর। হিজিবিজি কথা
শত শত রক্তজবা হয়ে দিত ঘূর্ণা চারপাশে, অগণিত
কংকাল সন্তের বেশে শোনাতো প্রবোধবাক্য কুটকচালের।

বুক শূন্য-করা ডাকে গুঞ্জরণময় ঘর থেকে
যে উন্মুল ক’রে নিয়ে যায়, সে চকিতে
নিয়ে যায় স্তব্ধ অনুষ্ঠানে, কোনোদিন
ফিরিয়ে দেয় না।