মৎসকন্যার কাহিনী

রক্তের সমুদ্র থেকে উঠে এল, যেন মৎস্যকন্যা জ্বলজ্বলে,
এল আশ্চর্যের ঘ্রাণ নিয়ে
সমস্ত শরীরে অপরূপ। কী নিঃশঙ্ক দ্বিধাহীন
আবির্ভাব। আসে লোক দশদিক থেকে দলে দলে
ছুটে আসে, অনেকেই লাফিয়ে লাফিয়ে
আসে ক্রমাগত রাত্রিদিন।
কাগজে ফুলের তোড়া জড়িয়ে অনেকে
আসে অনাবিল সম্মোহনে গ্রাম-গ্রামান্তর থেকে,
এবং শহুরে যারা তারা গলায় পরায়
মালা, বাদ্যরবে পথঘাট
কেমন ভরাট
হয়ে যায়। বিলায় মিষ্টান্ন কেউ, কেউবা ছড়ায়
ফুলের পাপড়ি সারাক্ষণ,
ওড়ায় নিশান ঘরে ঘরে। কেউ কেউ
হয় নতজানু, হয় বিহ্বল স্বপ্নের করতলে। কী বিপুল জাগরণ

ব্যাপক খোয়ারিগ্রস্ত দেশে। দূর সমুদ্রের ঢেউ,
জলজ উদ্ভিদ, শুক্তি, রঙিন ঝিনুক আর প্রবালের স্মৃতিময় তার
সত্তা থেকে ঝরে গান মুক্তির মাতৃভাষায়। মুগ্ধ জনতার
মধ্য থেকে কেউ কেউ আড়চোখে অশ্লীল তাকায়,
শিটি দ্যায়, কেউ কেউ খুব
সুখ পায় তার স্তন এবং নিতম্বের চুরুটের ছ্যাঁকা দিয়ে মাঝে মাঝে,
যেমন নেরুদা লিখেছেন কবিতায়।

অথচ সে ভাষাহীন অভিমানে যায় না সমুদ্রে ফিরে, ডুব
দিয়ে জলে হয় না অদৃশ্য। অবিচল সে দাঁড়িয়ে থাকে, বাজে
সত্তাময় দীপ্ত বাঁশি ইতরজনের অশ্লীলতা
নির্যাতন নোংরামির প্রতি সর্বদা সে উদাসীন, স্বাধীনতা।