পরাগের মূর্তি

একটু আগেও মগজের সীমানায় কিছুই তো
ছিল না বস্তুত জমা, এমনকি কুয়াশা অথবা
তুলোর রোঁয়ার মতো ভেসে বেড়ায়নি কোনো কিছু।
অকস্মাৎ কী যে হয়; বলা নেই কওয়া নেই, কার
পদপাত চেতনায় আলোড়ন তোলে অন্ধকারে,
বিশীর্ণ নিষ্পত্র ডালে জন্মায় গুল্মের থলোথলো।
যে হরিণ স্বপ্নে দিয়েছিল দেখা জ্যোৎস্নারাতে, তার
দুটি চোখ কথা বলে রাধার ভাষায়, যেন আমি
বৃন্দাবনে কাজল দিঘির ধারে বাঁশি হাতে একা
বসে আছি, এখনই জাগবে সুর চারদিকে ফুঁয়ে
ফুঁয়ে; পরমুহূর্তেই ট্রাউজার আর চেক শার্ট
পরা-আমি কবিতা আবৃত্তি করি পানমত্ত ক্লাবে
ক্ল্যারিওনেটের তালে তালে। অনন্তর বাউলের
বেশে আমাকেই দেখা যায় গৈরিক প্রান্তরে নেচে
বেড়ানোর ভঙ্গিতে, আমার পাশে দেখি না কাউকে,
ডাঙায় নদীর ধ্বনি, আসমানে তারার বৈভব।
চেয়ে দেখি অগ্নিবর্ণ এক বাঘ আমার স্বপ্নের
হরিণের গ্রীবা ছিঁড়ে ফেলে জঙ্গলে মিলিয়ে যায়
নীল কুয়াশায়, আমি ফেলে-আসা পুরানো বাড়ির
পাশ দিয়ে একা হেঁটে চলে যাই, যেন সে নিবাস
ছিল না সেখানে কোনোদিন। যে আমার কবিতার
জীবন সম্প্রতি, তার পদধ্বনি জাগে বৃষ্টির শব্দের
অন্তরালে, আমি তার দিকে হাত বাড়াতেই দেখি
পরাগের অসামান্য মূর্তি এক সমুখে দাঁড়ানো।

১০/৪/৯৫