বেজায় রাগ

ও হাড়গিলে, হাড়গিলে ভাই, খাপ্পা দেখি বড্ড আজ!
ঝগড়া কি আর সাজে তোমার?
এই কি তোমার যোগ্য কাজ
হোমরা-চোমরা মান্য তোমরা বিদ্যে, বুদ্ধি, মর্যাদায়,
ওদের সঙ্গে তর্ক করছ- নাই কি কোন লজ্জা তায়?
জানছ নাকি বলছে ওরা? ‘কিচির মিচির কিচ্ছিরি,’
অর্থাৎ কিনা তোমার নাকি চেহারাটা বিচ্ছিরি!
বলছে, আচ্ছা বলুক, তাতে ওদেরই তো মুখ ব্যথা,
ঠ্যাঁটা লোকের শাস্তি যত, ওরাই শেষে ভুগবে তা।
ওরা তোমায় খোঁড়া বলছে? বেয়াদব তো খুব দেখি!
তোমার পায়ে বাতের কষ্ট ওরা সে-সব বুঝবে কি?’
তাই বলে কি নাচবে রাগে? উঠবে চটে চট করে?
মিথ্যে আরো ত্যক্ত হবে ওদের সাথে টক্করে।
ওই শােনো, কি বলছে আবার, কচ্ছে কত বক্তৃতা-
বলছে, তোমার ন্যাড়া মাথায়
ঘােল ঢালাবে- সত্যি তা?
চড়াই পাখির বড়াই দেখ তোমায় দিচ্ছে টিটকিরি-
বলছে, তোমার মিষ্টি গলায়
গান ধরো তো গিটকিরি।
বলছে, তোমার কাঁথাটাকে ‘রিফুকর্ম’ করবে কি?
খোঁড়া ঠ্যাঙে নামবে জলে?
আর কোলাব্যাং ধরবে কি?
আর চটো না, আর শুনো না,
ঠ্যাঁটা মুখের টিপ্পনি,
ওদের কথায় কান দিতে নেই সরে পড় এক্ষনি।।
‘পরি’পূর্বক বিষ’ধাতু তাহে ‘অনট্‌’ ব’সে
তবে ঘটায় পরিবেশণ, লেখে অমরকোষে।
-অর্থাৎ ভোজের ভাণ্ড হাতে লয়ে মেলা
ডেলা ডেলা ভাগ করি পাতে পাতে ফেলা।
এই দিকে এসো তবে লয়ে ভোজভাণ্ড
সমুখে চাহিয়া দেখ কি ভীষণ কাণ্ড!
কেহ কহে “দৈ আনো” কেহ হাঁকে “লুচি”
কেহ কাঁদে শূন্য মুখে পাতখানি মুছি।
কোথা দেখি দুই প্রভু পাত্র লয়ে হাতে
হাতাহাতি গুঁতাগুঁতি দ্বন্দ্বরণে মাতে।
কেবা শোনে কার কথা সকলেই কর্তা-
অনাহারে কতধারে হল প্রাণ হত্যা।
কোনো প্রভু হস্তিদেহ ভুঁড়িখানা ভারী
ঊর্ধ্ব হতে থপ্‌ করি খাদ্য দেন্‌ ছাড়ি।
কোনো চাচা অন্ধপ্রায় (‘মাইনাস্ কুড়ি’)
ছড়ায় ছোলার ডাল পথঘাট জুড়ি।