ছড়া

টিক টিক চলে ঘড়ি, টিক টিক টিক,
একটা ইঁদুর এল সে সময়ে ঠিক।
ঘড়ি দেখে একলাফে তাহাতে চড়িল,
টং করে অমনি ঘড়ি বাজিয়া উঠিল।
অমনি ইঁদুরভায়া ল্যাজ গুটাইয়া,
ঘড়ির ওপর থেকে পড়ে লাফাইয়া!
ছুটিয়া পালায়ে গেল আর না আসিল,
টিক টিক টিক ঘড়ি চলিতে লাগিল।।

বলছি ওরে, ছাগলছানা,
উড়িস নে রে উড়িস নে।
জানিস তোদের উড়তে মানা-
হাত-পাগুলো ছুঁড়িস নে।।

বাস রে বাস! সাবাস বীর!
ধনুকখানি ধরে,
পায়রা দেখে মারলে তীর-
কাগটা গেল মরে!

মমিদো পুতুল আসছে তেড়ে,
কাঠের ঘোড়া খটখটাং
সামনেওয়ালা জলদি ভাগো,
নৈলে পরে চিৎপটাং।

দাদা গো দাদা, সত্যি তোমার
সুরগুলো খুব খেলে!
এমনি মিঠে, ঠিক যেন কেউ
গুড় দিয়েছে ঢেলে।
দাদা গো দাদা, এমন খাসা
কণ্ঠ কোথায় পেলে?
এই খেলে যা! গান শোনাতে
আমার কাছেই এলে?
দাদা গো দাদা, পায় পড়ি তোর,
ভয় পেয়ে যায় ছেলে-
গাইবে যদি ঐখেনে গাও,
ঐদিকে মুখ মেলে।

নন্দঘোষের শামলা গোরু ভাগল কোথায় লক্ষ্মীছাড়া?
নন্দ ছোটে বনবাদাড়ে, সন্ধানে ধায় বদ্যিপাড়া।
শেষ কালেতে, অর্ধরাতে হদ্দ হয়ে ফিরলে পরে-
বাসায় দেখে ঘুমোয় গোরু ল্যাজ গুটিয়ে গোয়ালঘরে।

ছোটো-ছোটো ছেলেগুলো কিসে হয় তৈরি,
-কিসে হয় তৈরি?
কাদা আর কয়লা, ধুলো, বালি, ময়লা,
এই দিয়ে ছেলেগুলো তৈরি।
ছোটো-ছোটো মেয়েগুলি কিসে হয় তৈরি?
কিসে হয় তৈরি?
ক্ষীর, দধী, চিনি আর ভালো যাহা দুনিয়ার,
মেয়েগুলি তাই দিয়ে তৈরি।।

আরে ছিছি, রাম, রাম! কলকাতা শহরে,
লাল ধুতি পরে খুদি তিনহাত বহরে।
মখমলি জামাজুতো, ঝকমকে টোপরে,
খায় দায়, গান গায়, রাস্তার ওপরে।।

বড়ো তুমি লোকটি ভালো,
চেহারাও নয়তো কালো-
তবু কেন তোমায় ভালোবাসছি নে?
কেন তা তো কেউ না জানে,
ভেবে কিছু পাই নে মানে,
যতই ভাবি ততই ভালোবাসছি নে।।

তিনবুড়ো পণ্ডিত টাকচুড়ো নগরে
চড়ে এক গামলায় পাড়ি দেয় সাগরে।
গামলাতে ছেঁদা ছিল, আগে কেউ দেখে নি,
গানখানি তাই মোর থেমে গেল এখনি।।

জংলাবনের পাগলাবুড়ো আমায় এসে বলে,
“আড়াই বিঘা সমুদ্রেতে কাঁটাল কত ফলে?”
আমিও বলি আন্দাজেতে, “বলছি শােনাে কত-
তোমাদের ঐ ঝিঙের খেতে চিংড়ি গজায় যত।”

“ম্যাও ম্যাও হুলোদাদা, তোমার যে দেখা নাই?”
“গেছিলাম রাজপুরী রানীমার সাথে ভাই।”
“তাই নাকি? বেশ, বেশ, কি দেখেছ সেখানে?”
“দেখেছি ইঁদুর এক রানীমার উঠানে।”

গাধাটার বুদ্ধি দেখ
চটি মেরে সে নিজের গালে,
কে মেরেছে দেখবে বলে
চড়তে গেছে গাছের চালে।।
হাতে ধনু, পিঠে তূণ,
বাছা তবু কেঁদে খুন!
তূণভরা আছে তীর,
কাঁদ কেন মহাবীর?
ভাঙা ধনু, কাঁদ তাই?
আহা! আহা! মরে যাই।

রঙ হল চিড়েতন, সব গেল ঘুলিয়ে,
গাধা যায় মামাবাড়ি টাকে, হাত বুলিয়ে
বেড়াল মরে বিষম খেয়ে, চাঁদের ধরল মাথা,
হঠাৎ দেখি ঘরবাড়ি সব ময়দা দিয়ে গাঁথা।।

খামচা, খবিল, ডাইনেবাঁয়ে,
হুড় মুড়িয়ে হুলোর মতো।
তক্ক যখন শান্ত হল,
ক্ষান্ত হল আঁচড়দাগা,
থাকত দুটো আস্ত বেড়াল,
রইল দুটো ল্যাজের ডগা।।

খিলখিল্লির মুল্লুকেতে
থাকত নাকি দুই বেড়াল।
একটা শুধােয় আরেকটাকে,
“তুই বেড়াল, না মুই বেড়াল?”
সেই থেকে হয় তর্ক শুরু,
চীৎকারে তার ভূত পালায়,
আঁচড়কামড়, চকিবাজি,
ধাঁই ধপাধপ চড় চালায়।

ডাক্তার ফস্টার
ইস্কুল মাস্টার।
বেত তার চটপট,
ছাত্রেরা ছটফট-
ভয়ে সব পস্তায়,
বাড়ি ছেড়ে রাস্তায়,
গ্রাম ছেড়ে শহরে,
গয়া কাশী লাহােরে।
ফিরে আসে সন্ধ্যায়
পড়ে শোনে মন দ্যায়।

উঠোন কোণে কড়াই ছিল, পায়েস ছিল তাতে,
তাই নিয়ে কাক লড়াই করে কুঁকড়ো বুড়োর সাথে।
যুদ্ধ জিতে বড়াই ভারি, তখন দেখে চেয়ে-
কখন এসে চড়াইপাখি পায়েস গেছে খেয়ে।

কেন সব কুকুরগুলো খামখা চ্যাঁচায় রাতে?
কেন বল দাঁতের পোকা থাকে না ফোকলা দাঁতে
পৃথিবীর চ্যাপটামাথা, কেন সে কানের দোষে?
এসো ভাই চিন্তা করি দুজনে ছায়ায় বসে।।

সন্দেশের গন্ধে বুঝি দৌড়ে এলে মাছি?
কেন ভন ভন হাড়-জ্বালাতন, ছেড়ে যেও না বাচি!
নাকের গোড়ায় শুড়শুড়ি দাও, শেষটা দেবে ফাঁকি?
সুযোগ বুঝে সুড়ুৎ করে হুল ফোটাবে নাকি?