নদীর ধারে একা

একলা একলা বসেছিলুম চূর্ণী নদীর ধারে
একটা দুটো জোনাকি-ফুল ফুটছে অন্ধকারে
আর তো কিছুই দেখা যায় না, আকাশে নেই তারা,
খেয়ার ঘাটও বন্ধ এখন, নিঝুম জেলেপাড়া।
গাছের ডালে ফুরফুরিয়ে দোল খাচ্ছে হাওয়া,
কেমন করে ওপারে যাই, হল না বুঝি যাওয়া
ছলাতছল ঢেউয়ের শব্দ, নদী ভাঙছে কূল
ভরা বর্ষায় চূর্ণী যেন খুশিতে মশগুল।

একলা বসে কী যে করি, সামনে সারারাত,
পেট জ্বলছে খিদেয়, আজ কপালে নেই ভাত
একটা যদি বাঁশি থাকত লাগিয়ে দিতুম সুর,
কদমগাছের তলায় না হয় হতুম কেষ্টঠাকুর।
রূপকথার গল্পগুলো হঠাৎ সত্যি হলে
মনপবনের নৌকোখানি ভেসে উঠত জলে।
কিংবা তেমন মন্ত্র যদি জানা থাকত আমার
শূন্য পথে পেরিয়ে যেতাম নদী ও খেত-খামার!

মেঘ ডাকল দারুণ, দেখি বিদ্যুতের ছটায়
একটা কাগজ পড়ল আমার পায়ের কাছটায়,
কাগজ তো না, চিঠি একটা, আকাশ থেকে এল?
নিশুত রাতে আমায় এমন চিঠি কে লিখল?
সত্যি-সত্যি চিঠিই সেটা বাংলা অক্ষরে,
আবার বিজলি চমক দিতেই নিলুম সেটা পড়ে।
খিদে-তেষ্টা রইল না আর জুড়োল প্রাণমন,
সেই চিঠিটার মানে বুঝতেই কাটবে সারাজীবন!