এসকেলেটর

ক্রমশ নামছি নিচে, পিছে প’ড়ে আছে পিরিচে ফলের মতো চাঁদ,
যে-কোনো প্রস্থানে যার মুখ বাল্যস্মৃতিসম মনে পড়ে মানুষের;
হাঁটুতে নির্ভর ক’রে হেলে আছে নড়োবড়ো ঘরের মতো সভ্যতা,
যে-কোনো প্রস্থানে যার থাম ভেঙে পড়ে, জ’মে ওঠে ইট কাঠ মল
অন্দরে ও রাজপথে; এ-সবের তলে তাজা প্রাগৈতিহাসিক ঘাস
অন্তিম দীপের মতো ঢালে সংগোপনে অতীন্দ্রিয় সুস্থ পরিমল।

দুই ঠোঁটে জমেছে প্রভূত ময়লা এতো দিন, যেনো প্রতিদিন
পরম তৃপ্তির সাথে ক’রেছি আহার মলমূত্র, নর্দমার
প্রবাহিত স্রোত থেকে ব্যগ্র ওষ্ঠে লেহন ক’রেছি মৃত্যু, পুণ্যলোভী
প্রত্যেক চুম্বন সঞ্চয় ক’রেছে ব্যাধি দুরারোগ্য ক্ষতস্থল থেকে।

পাতালের প্রেম এই সিঁড়ি, মসৃণ মায়াবী, পবিত্র নামছে নিচে
আমাকে বহন ক’রে, অদৃশ্যের সুস্থলোক থেকে ডানা মেলে
পাখির ঝাঁকের মুতো বয়ে আসে সুস্থ বায়ু আঙুলের স্পর্শ
নিরাময় রাখে আঁকাবাঁকা চুলে, স্বাস্থ্যে, ভেতরে মেলেছে দল শাদা
শতদল, সম্মুখে স্বাস্থ্যল নদী পিপাসার, বাঁয়ে স্বাস্থ্যকর জল।

নানা তরুবর মুকুলিত হয়, আমি সেই নীলছোঁয়া তরু,
সঞ্চারিণী পল্লবিনী স্তবকবিনম্রা, তুমি আজ ফিরে গেছো ঘরে
পদচিহ্ন রেখে গেছে কালস্রোতে অমলিন, প্রতিটি পুষ্পেপল্লবে,
অবিনাশী এক বিন্দু কালো অশ্রু ফেলে গেছো এসকেলেটরে।

সৎ হচ্ছি সুস্থ হচ্ছি নামছি যত নিচে, নবোদগত অঙ্কুরের মতো
বস্তু ও বাক্যের পত্রে লাগে বিশুদ্ধতা, কথোপকথন হ’য়ে ওঠে
প্রার্থনার শুদ্ধ স্তব, যেনো কোনো দিন গদ্য ও বস্তুকে ধরিনি
আমার কণ্ঠে, পাখিরে দিয়েছে সুর এ-কণ্ঠের সবুজ অরণ্য
থেকে সুর পেতে, সৌরসুর গীত হবে অন্ধকারে একটি ঝঙ্কারে।