শত্রুদের মধ্যে

আমার অন্ধ অন্যমনস্ক পা পড়তেই রাগী গোখরোর মতো ফুঁসে উঠলো
দিগন্ত-মেঘের-দিকে-ব’য়ে-যাওয়া লকলকে একটা লাউডগা,
শেষ-সংকেত-উদ্যত দোলকের মতো, রক্তভরা শিরা লক্ষ্য ক’রে,
দোলাতে লাগলো ভয়ঙ্কর কারুকার্যমণ্ডিত প্রতিশোধস্পৃহ মারাত্মক ফণা।

একটি প্রফুল্ল ধানগাছ, বাল্যস্বপ্নে সারারাত হানাদার ডাকাত সর্দারের
ছোরার ঝকঝকে ঝিলিকের সমান তেজে ও ক্ষুধায় ও উৎসাহে
আমূল বসিয়ে দিলো, হৃৎপিণ্ডের দূরতম রক্ত-মাংস-ও স্বপ্ন-কোষ পর্যন্ত,
ফসলভারাতুর উজ্জ্বল সোনালি তীক্ষ্ণ সাংঘাতিক রেড।

একটি বর্ণাঢ্য বাঘের সৌন্দর্যে-স্বপ্নে-ক্রোধে দিগন্তের পুব পার থেকে
অভ্র-বন্যা ভেদ ক’রে আমার ঘাড়ের ওপর
লাফিয়ে পড়লো টকটকে লাল একটা হিংস্র গোলাপ।

দিগন্তের পশ্চিম প্রান্তে, শির লক্ষ্য ক’রে, বিজ্ঞানমনস্ক শত্রু
ছুঁড়ে দিলো তার স্বয়ংক্রিয় পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র- সূর্যাস্ত।
বাল্যপ্রেমিকার মারাত্মক ওষ্ঠের মতো
কেঁপে উঠলো পদ্মদিঘি।

পাতাবাহার বুকের ভীষণ কাছে নিঃশব্দে বাড়িয়ে ধরলো সবুজ পিস্তল।

শেষ নিশ্বাসের আগে চোখে পড়লো খেজুরের ডালে
আটকে আছে চাঁদ: বাল্যে খেলা-শেষে-ভুলে-ফেলে-আসা
মেলা-থেকে-কেনা হাল্কা বেলুন!