গ্রে স্ট্রিট

বিবর্ণ পালক পেয়ে- অন্ধকারে- শীতে
চোখ তুলি- আবাবিল পাখির মতো হঠাৎ চকিতে
আমার মুখের পানে চায়
আমারে কি চেনে এরা? কোনও দিন দেখেছিল?… ধীরে-ধীরে দু’ চোখ ফিরায়ে
ক্ষুব্ধ হয়,- ক্ষুব্ধ হয় না ক’; জীবনের অন্য অর্থ ইহাদের
হতাশ্বাস হয় সব এরা- নাই কোনও অপেক্ষার কথা
তবু আমি ইহাদের প্রতীক্ষার দীর্ঘ অক্লান্ততা
দেখিয়াছি; সারি-সারি শীতরাতে- রাত থেকে রাতে
জীবনের নর্দমার ক্লেদ ক্লান্তি সব ফুটপাথে
ইহাদের পাশে এসে জড়ো হয়
মেথর, ডাকের কুলি, মুটে
এক জন দুই জন কুঠে
চুপে-চুপে এইখানে আসে
যেই মাংস পাবে না ক’ তবু তার ছবি দেখে- ঘ্রাণ থেকে- আরক্ত আশ্বাসে
তৃপ্তি পেয়ে ফিরে যায়

কারণ এ-পৃথিবীতে মাংস শুধু কথা কয়- কথা কয়- আর সব গভীর নীরব
যাদের হৃদয়ে রক্তে- পৃথিবীর সেই সব শব
ইহাদের চারি-দিকে
এরা জীবনের যোদ্ধা নয়
আমি- তুমি- আমরা প্রবল
ব্যথিত বিরহী ছিন্ন- রক্তাক্ত গভীর
জীবনের উদঘাটনে নয় তার মতো যেন বীর
তুমি- আমি?

তবু
পাণ্ডুর শীতের রাতে- শীতে
প্রেম এক দূর স্বপ্ন যাহাদের, ব্যথা কোনও জয় নয়- জীবন সহিতে
প্রশ্ন যারা করে না ক’- উত্তর চায় না কিছু, আহা
যারা শুধু আর্ত হয়- আমি যাহা বুঝি নাই- কোনও সৈন্য সেনাপতি বোঝে নাই
যাহা
তেমন আঘাত সয়ে- এক-এক বার যারা করিতেছে জীবনেরে জয়
তবু যারা যোদ্ধা নয়- সেনাপতি নয়

আমার এ-কবিতায় জয় ক’রে গেল শুধু- প্রশ্ন শুধু তুলে গেল তারা
জীবনের ফুটপাথে অন্ধকারে যারা
অন্ধকারে- অবিচারে- শীতে
আমাদের কবিতা কেন কোনও দিন যাবে আর তাদের খুঁজিতে!