ইলশেগুঁড়ির বৃষ্টি

ইলশেগুঁড়ির বৃষ্টি ঝ’রে যায় দুপুরবেলায়
দু’ মুঠো সন্তপ্ত রৌদ্রে তবুও নগরী
এখন উজ্জ্বল ট্রাম মোটরের গায়ে
মানুষের সময়ের ঘড়ি
হেঁকে বলে সাধারণ সুবিধায়
প্রেমের মানুষ চাপা প’ড়ে যায়
মানুষের ভিড়ে
মেঘের আড়ালে সূর্য, তবু তার প্রতিভা রয়েছে
হয়তো এখুনি দেখা দেবে সশরীরে।

সূর্যকে ও-রকম ভাবে তবু দেখে ফেলি যদি
সে যেন কেমন এক পাপ।
চারি-দিকে প্রাসাদের গম্বুজ রয়েছে
আগাগোড়া রয়েছে হুবহু ঢের ধাপ
(তবুও দুপুরে ঘণ্টা বেজে গেলে নগরীর রোদে)
নগরীর তিন চার মাইল, মাইল, অন্ধকার মেঘে;-
ছিঁচকে ছুঁড়ির মতো আর্তিও করুণ, ক্রমে দানবীয় হয়
বিশৃঙ্খল জ্যামিতির মতন উদ্বেগে

নগরীর রাজপথ কাটাকুটি ক’রে
আয়ুর সকালবেলা যেই সব স্মরণীয় বৃহৎ নগরে
চুলে চিরুনির সুর শুনেছি বিভোর হয়ে আমি
সেই মেয়েটির রমণীয় বেণি চৌ-পহর একাগ্রতা নষ্ট ক’রে
অনেক অন্যায় পথ পরস্পরের সাথে মিশে
অনেক সরল পথ অতীব জটিল হয়ে গিয়ে
অনেক সহজ জ্ঞান বাক্যের ভাঁওতায় প’ড়ে
(নামধেয় বিজ্ঞানের আঁধারে হারিয়ে)
বিজ্ঞানের ব্যয়কুণ্ঠতার মুখে ম’রে গিয়ে

চোখের সুমুখে ক্লান্ত নগরীর উঁচু-নিচু দেয়ালের সীমা
মিশে গেছে- আধো-মিশে গিয়েছে বাতাসে
নিজেদের মলিন দীর্ঘতা ছাড়া মানুষের হৃদয়কে কিছু
দেখাতে পারে না অনায়াসে
সময়ের অন্তিম সীমায় গিয়ে তারা
পৃথিবীর সব-শেষ নগরীর পিছে
তোমাকে বিকেলবেলা খুঁজে পাবে। স্বভাবসকাল
হারায়েছে ব’লে আজ তার সেই সরলতা মিছে।