কবিতা

আমাদের হাড়ে এক নির্ধূম আনন্দ আছে জেনে
পঙ্কিল সময়-স্রোতে চলিতেছি ভেসে;
তা না হ’লে সকলই হারায়ে যেত ক্ষমাহীন রক্তে- নিরুদ্দেশে।
হে আকাশ, এক দিন ছিলে তুমি প্রভাতের তটিনীর;
তার পর হ’য়ে গেছ দূর মেরু-নিশীথের স্তব্ধ সমুদ্রের।
ভোরবেলা পাখিদের গানে তাই ভ্রান্তি নেই,
নেই কোনও নিস্ফলতা আলোকের পতঙ্গের প্রাণে।
বানরী ছাগল নিয়ে যে-ভিক্ষুক প্রতারিত রাজপথে ফেরে-
আঁজলায় স্থির শান্ত সলিলের অন্ধকারে-
খুঁজে পায় জিজ্ঞাসার মানে।
চামচিকা বার হয় নিরালোকে ওপারের বায়ু-সন্তরণে;
প্রান্তরের অমরতা জেগে ওঠে এক রাশ প্রাদেশিক ঘাসের উন্মেষে;
জীর্ণতম সমাধির ভাঙা ইঁট অসম্ভব পরগাছা ঘেঁষে
সবুজ-সোনালি চোখ ঝিঁঝি-দম্পতির ক্ষুধা করে আবিষ্কার।
একটি বাদুড় দূর স্বোপার্জিত জ্যোৎস্নার মনীষায় ডেকে নিয়ে যায়
যাহাদের যত দূর চক্রবাল আছে লভিবার।
হে আকাশ, হে আকাশ,
এক দিন ছিলে তুমি মেরু-নিশীথের স্তব্ধ সমুদ্রের মতো;
তার পর হ’য়ে গেছ প্রভাতের নদীটির মতো প্রতিভার।