কখনও বিদেশে গিয়ে

কখনও বিদেশে গিয়ে অনেক গভীর রাতে পেচকের ডাক
আমারে সিঁড়ির কাছে কিছু ক্ষণ রেখেছে অবাক
যেন এক প্রত্যাসন্ন শতাব্দীর ফলকের ইঙ্গিতের মতো
যখন সকল আলো নিভে গেল- ময়ূরের ঝাঁক
সিঁড়ির নিকটে হিম পাথর-মূর্তিতে ব্যক্তিগত মূর্তির কুক্ষিগত

কোথাও কক্ষের থেকে কয়েকটি নিঃচিহ্নিত মানুষের প্রাণ
এত রাতে- অন্ধকারে- মিশরের মমি’র সমান
দিতেছে এ-দেয়ালের সমাকুল রেখার ভিতরে
যেই প্রেমবোধ আর নিস্তব্ধ মরণ
বহু দিন বেঁচে থেকে- তার পর আরও বহু দিন বাস ক’রে

উচ্ছ্রিত সৌন্দর্য সব বহুতর ব্যবহারে হয়ে গেছে খোঁচ;
সময়ের নির্জনতা করিতেছে ব্যয়সঙ্কোচ।
বিস্ময়ে ভাবিতে আছে হয়তো-বা শিশুদের হাতে
দিয়েছিল চিন্তাভারাক্রান্ত ঢের অদ্ভুত কাজ
স্থবির- স্থবির হয়ে এখন ঘুমায়ে থাক নির্লিপ্ত রাতে

ফল পেকে ধ্ব’সে গেলে- বহু দিন পরে
প্রত্যাগমন করে মেধাবিনী ফুলের ভিতরে
কাকের অজ্ঞাত;- তবু সেই সূত্র জেনে
মক্ষিকা প্রবেশ করে প্রশান্ত বিবরে
আমরাও গোধূলিসন্ধির এই ইতিহাস মেনে

মনে হয় ঢের পূর্বগামী সব কবির রূপক
পাঁশুটে মাছদের মতো থালার উপরে তারা ক্রমেই হতেছে আরও ভিড়
বাসি মাংসের মতো ক্রমেই হতেছে আরও টক
দেয়ালঘড়িতে কাঁটা সময়ের বৃদ্ধ আলোচক
অম্লতা ও ঘুম ছাড়া কী পাবে স্থবির

যখন স্থবির আবার উঠিবে জেগে বুঝে
ধূসর পেঁচা’কে এই আঁধার বুরুজে
হর্ষ ব’লে মনে হয় মুমূর্ষুর চোখে
চক্রাকারে উড়িছে সে অনাদি আদিম বৃত্ত খুঁজে
এখানে মন্থনদণ্ড ঘুরে যায় ভুল থেকে নির্ভুল গণিতের ঝোঁকে।