ক্রমেই কলের শব্দ বেজে ওঠে

ক্রমেই কলের শব্দ বেজে ওঠে চারি-দিক থেকে
দু’-এক মুহূর্ত আগে জল
আলো, কবুতর, মেঘ- এ-সব প্রতিভা
নিজেদের দুরবস্থা শেষ ক’রে খানিক বিহ্বল

ঈষৎ অবাক হয়ে উড়ে যেতেছিল চার-দিকে
মনে হয়েছিল যেন শিশিরের মতো শব্দ হয়
তবুও সহসা বাঘ বেলা নয়টায় নেমে এল
সকল বিষয়ে তার মুখ জেগে রয়।

সন্ধ্যার শুক-ব্যথা জাগায়ে-জাগায়ে জ্বলে বই ইতিহাস
প্রভাতের শুকতারা মুছায়ে-মুছায়ে রক্তলোলুপ উন্মেষে
ফা-হিয়ানের চোখে কেমন গরিমা নিয়ে দেখা দিল তবু
সময়ের ভুলে আজ এ-রকম ক্লান্ত তিন শতকের পৃথিবীতে এসে।

সময় কৃমির মতো কেটে যায়- নিজের শরীর
আমাদের দেশে নেমে এসে
আমাদের পিতামহ- পিতা ম’রে গেছে
সন্তানেরা অহিনকুলের মতো কায়ক্লেশে

পরস্পরের সাথে মিশে গিয়ে সূর্যের আলোয়
বিপথের মাঝখানে সারা-দিনমান
বিড় বেঁধে প’ড়ে আছে অতিরিক্ত বিষে
যদি এর থেকে জন্ম নেয় কল্যাণ

এ-রকম ধারণায়; ক্লান্ত দক্ষকন্যাদের মতো
আমাদের দুহিতারা সব
কোথাও প্রতিজ্ঞাপাশ ভেঙে গেছে জেনে
দুর্দশাকে সারা-রাত করে অনুভব।

সকালের সূর্য এলে আমাদের বড় নগরীতে
আমাদের চেয়ে কারু বৃহত্তর মন
দীক্ষিত মানুষদের শিবিরের গৌরবে সাজায়ে
আমাদের জীবনকে জনসাধারণ

মনে ভেবে ফেলে গেছে স্তব্ধতার দিকে
সকলই নীরব শান্তি হয়ে যায় ক্রমে
সান্ত্বনার- মরণের অতীব প্রসার
সর্বদাই অপরের উন্নত নিয়মে

সবের উপরে এক নিরাবিল মায়াবী রয়েছে
ঢের দিন আগে এক জীর্ণ প্রতিশ্রুতি
দিয়ে তবু নিমেষেই নিজের নিয়মে ভেঙে ফেলে
বাড়াতেছে আপনার মায়ার বিভূতি।

নিসর্গের অদ্ভুত আনন্দে ভোরবেলা জেগে উঠে
তাহার প্রাণের কাছে ধরা দিতে গিয়ে মনে হয়
আমরাই অনুভূত হতে চেয়ে- তবুও বধির
বাঘের শরীর ছুঁতে পেয়েছি মহানুভব ভয়!