নৃত্যের অবসর

অনেক শান্তির পরে- আবার এসেছে ফের
আশ্চর্য নৃত্যের অবসর
মনে হয় আমি যেন দানবীয় নারী এক
আর তুমি, হে আকাশ, আমার মকর
আর এই পৃথিবীর লোষ্ট্রের তরঙ্গগুলো
নিজেদের চেয়ে মহত্তর

পায়ের ভঙ্গির নিচে আমাদের
হয়তো-বা এ-পৃথিবী নাই
শুনে গেছি বেবিলন
হয়ে গেছে ছাই
আবার উঠেছে গ’ড়ে অনেক নতুন সিংহ, থাম
বৃষ-কর্কটের চাকা ঘোরে সর্বদাই

আমরা জলের ম্লান জননী-আবেগ
জাহ্নবীর পরিমেয় জলে
হাতের তেলোয় যদি এ-নদীকে পাওয়া যায়
তবে আর কঙ্কালের মতন ভূতলে
র’বে না সে; মানুষের আবর্তিত আত্মা যেন জল
মৃত্যু, মিথ্যা, রিরংসার সব কোলাহলে
নেচে ওঠে; চারি-দিকে যদিও রয়েছে মরুভূমি
সিংহ, উষ্ট্র, উট-পাখি, পিরামিডের মতো ক্লান্ত, কালো
আরশিতে- ঢের সব প্রেমিকের বিকুঞ্চিত কানে
যদিও ঝলিছে কাঁচি- সময়ের মতন ধারালো
তবু মানুষের আত্মা এক বার তুড়ি দিয়ে ব্যাপ্তি পেয়ে গেলে
জল হয়: সকল নদীর স্রোতে ইঁদুর-ধূসর এক আলো।

কাকের পালক থেকে আভা পায় হয়তো পায়ের নিচে নিজস্ব নরক
হয়তো-বা পৃথিবীর উপদংশ-ক্ষয়িত প্রভাত;
সেই বিভা- আর সব দার্শনিকদের প্রাণে যেই ঈর্ষা জন্মেছিল
ধীরে চুরি ক’রে নিয়ে এইখানে তরঙ্গের হাত
নিজেকে নিঃশব্দ করে- মোমের বাতির মতো বেগে
জ্ব’লে যায়- আমাদেরও নৃত্যে সেই জলের-নেউল-ধূসরতা।