পাড়াগাঁর পথে বেঁচে থেকে

জানি সে অনেক দিন পাড়াগাঁর পথে বেঁচে থেকে
রাত হলে আমাদের সকলের চেয়ে
নিসর্গের ঢের বেশি বিস্ফারিত ভালো অন্ধকার
নিজের চোখের কাছে গিয়েছিল পেয়ে
যাতে তার ঘরবারে, দুয়ারে, সিঁড়ির কাছে এক-জোড়া চোখ
কিছুটা হলুদ, নীল হয়ে ক্রমে পেয়েছিল বিড়ালের মতন আলোক।

ছাদের উপরে ব’সে- শুয়ে থেকে- অন্ধকারে একা
ক্রমেই সে থেকে যেত- অবশেষে হাওয়ার আলাপে
মনে হত যেন তার মুখের ভিতরে
পুরুষ এবং নারী জোনাকি’র দু’টো চোখ কাঁপে
পরস্পরের থেকে এক ভুল ব্যবধানে- ঈষৎ বাতাসে
অনেক আগের সেই মুখখানা- ক্রমেই অস্পষ্ট হয়ে আসে।

এক-দিন- তখন ব্রহ্মা’র ডিমে অন্য যুগ ছিল
তার ভাঙা দরদালানের স্তব্ধ ছায়া থেকে নেমে
হয়তো সে অপরূপ মেহগেনি টেবিল কিনেছে
অথবা টিপয় ভেবে- টিপয়ের কাছে চুপে থেমে
বুলায়ে নিলাম আমি অন্ধকারে অকাতর হাত
তখন চোখের আগে বার হল স্বর্গীয় বিড়ালের দাঁত।

পুরুষের হাত কবে পড়েছিল নারীটির হৃদয়ের ‘পরে
যখন টিপয় হয় নারী
তখন সে-রমণীর মোক্ষম প্রেমিক দূর নগরীর পথে
গ্যাস আর বিদ্যুতের উজ্জ্বলতা নিয়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি
করেছিল। মানুষের হাত যদি নদী হতে চায়- তবু বুঝে নিয়েছিল তার পর
তবে সে-নদীর ঢেউয়ে (ধরা প’ড়ে) মেয়েটির হৃদয় পাথর।