পৃথিবীর পথে আমি

পৃথিবীর পথে আমি বহু দিন বাস ক’রে হৃদয়ের নরম কাতর
অনেক নিভৃত কথা জানিয়াছি; পৃথিবীতে আমি বহু দিন
কাটায়েছি; বনে-বনে ডালপালা উড়িতেছে- যেন পরী জিন্‌
কথা কয়; ধূসর সন্ধ্যায় আমি ইহাদের শরীরের ‘পর
খইয়ের ধানের মতো দেখিয়াছি ঝরে ঝর্‌-ঝর্
দু’-ফোঁটা মেঘের বৃষ্টি,- সাদা ধুলো জলে ভিজে হয়েছে মলিন,
ম্লান গন্ধ মাঠে খেতে… গুবরে পোকার তুচ্ছ বুক থেকে ক্ষীণ
অস্পষ্ট করুণ শব্দ ডুবিতেছে অন্ধকারে নদীর ভিতর:

এই সব দেখিয়াছি;- দেখিয়াছি নদীটিরে- মজিতেছে ঢালু অন্ধকারে;
সাপমাসী উড়ে যায়; দাঁড়কাক অশ্বত্থের নীড়ের ভিতর
পাখনার শব্দ করে অবিরাম; কুয়াশায় একাকী মাঠের ধারে
কে যেন দাঁড়ায়ে আছে; আরও দূরে দু’-একটা স্তব্ধ খোড়ো ঘর
প’ড়ে আছে;- নলখাগড়ার বনে ব্যাঙ ডাকে কেন- থামিতে কি পারে;
‘তুমি কেন এইখানে’, ‘তুমি কেন এইখানে’- শরের বনের থেকে দেয় সে উত্তর।
(আবার পাখনা নাড়ে- কাকের তরুণ ডিম পিছলায়ে প’ড়ে যায় শ্যাওয়ার ঝাড়ে)