শীতের কুয়াশা

শীতের কুয়াশা এসে অন্ধকার শার্সিতে লাগে
তার পর বাদলের ঝড় এসে অন্ধকার শার্সিতে লাগে
তৃতীয় প্রহর রাত- ‘কে জাগে’ শুধায় যদি বাহিরের ভূত
যদি বলি, ‘শতদল জাগে?’

এখন গভীর ভাবে কফি বা চায়ের আয়োজন
ছাদের ফুটোর থেকে হয়তো-বা বাদলের জল
পেয়ালার মৌতাত ফিকে ক’রে যায়
এমনই গভীরতর প্রকৃতির বল

অন্ধকার থেকে জল পরিহাসে শার্সিতে টোকা দিয়ে যায়
নদীর ভিতরে গায় আত্মপ্রতীতির শব্দ শুনি অবিকল
কোনও এক দার্শনিক বলেছিল মানুষের কাজ শেষ হলে
তাহার বিমুক্ত আত্মা জল।

বাদলের আঁধার আঘাতে শার্সি এখন বধির হয়ে গেছে
আমরা দু’ জন আজ তিন জন যে-রকম অন্ধকার ঘরের ভিতরে
বসেছি আয়ুর আলো, কার্য-বিবরণী শেষ ক’রে
আমাদের পিতৃলোকও এ-রকম সাড়ে তিন হাত ছিল গড়ে?

আমাদের সন্ততিরা- সন্ততির সন্ততিরা এ-রকম হবে?
এ-রকম কারাগারে, প্রব্রজ্যায়, শুঁড়িখানা-গ্রন্থাগারে ব’সে থাকা পাপ
তবুও বাহিরে গেলে কর্মময় শনিকেই শুদ্ধ মনে হয়
ভালো লাগে রাজা, রানি, সাধু, বাকপতিদের সুন্দর প্রলাপ।

কোনও এক দার্শনিক বলেছিল মানুষের কাজ শেষ হলে
তাহার বিমুক্ত আত্মা জল
গান্ধি, স্ট্যালিন, হ্যালিফ্যাক্স তবু কাজের ভিতরে নির্মল
তৃষ্ণা পেলে খাওয়া যায় সেই সব উপাদেয় জল

জেনে আমি কী ক’রে তবুও আজ আঁধারে রয়েছি
শিশুর ডালার থেকে খেলার-গণেশ তুলে নিয়ে
সহস্র-দলের রাত জেগে আছে বিবেককে চোখ ঠার দিয়ে
কল্পনার গোভূত তাড়িয়ে

কোথায় রয়েছি ব’সে জানি আমি, মনে হয়,- তবু তাহা লোকসামান্যতা
অপ্রিয়-সত্য-দর্শী গুরু তার শুদ্ধ মনোভাবে
শুভ কথা ব’লে যায়- কুসংবাদ ঢের পরে দেবে।
সময় রয়েছে ঢের- গুরুচণ্ডালীর প্রেম অসময় ঘনালে ফুরাবে।