রৌদ্র-দগ্ধের গান

এবার আমার জ্যোতির্গেহে তিমির-প্রদীপ জ্বালো।
আনো অগ্নি-বিহীন দীপ্তি-শিখার তৃপ্তি অতল কালো।
তিমির-প্রদীপ জ্বালো।

নয়ন আমার তামস-তন্দ্রালসে
ঢুলে পড়ুক ঘুমের সবুজ রসে,
রৌদ্র-কুহুর দীপক-পাখা পড়ুক টুটুক খসে,
আমার নিদাঘ-দাহে অমা-মেঘের নীল অমিয়া ঢালো।
তিমির-প্রদীপ জ্বালো।।

মেঘে ডুবাও সহস্রদল রবি-কমল-দীপ,
ফুটাও আঁধার-কদম-ঘুম-শাখে মোর স্বপন মণি-নীপ।
নিখিল-গহন-তিমির-তমাল গাছে
কালো কালার উজল নয়ন নাচে,
আলো-রাধা যে-কালোতে নিত্য মরণ যাচে-
ওগো আনো আমার সেই যমুনার জল-বিজুলির আলো।
তিমির-প্রদীপ জ্বালো।।

দিনের আলো কাঁদে আমার রাতের তিমির লাগি
সেথায় আঁধার-বাসর-ঘরে তোমার সোহাগ আছে জাগি।
ম্লান করে দেয় আলোর দহন-জ্বালা
তোমার হাতের চাঁদ-প্রদীপের থালা,
শুকিয়ে ওঠে তোমার তারা-ফুলের গগন-ডালা।
ওগো অসিত আমার নিশীথ-নিতল শীতল কালোই ভালো।
তিমির-প্রদীপ জ্বালো।।

[সমস্তিপুরের ট্রেন-পথে। ফাল্গুন ১৩৩০]