ধ্যানভঙ্গ

পদ্মাসনার সাধনাতে দুয়ার থাকে বন্ধ,
ধাক্কা লাগায় সুধাকান্ত, লাগায় অনিল চন্দ।
ভিজিটর্কে এগিয়ে আনে; অটোগ্রাফের বহি
দশ-বিশটা জমা করে, লাগাতে হয় সহি।
আনে ফটোগ্রাফের দাবি, রেজিস্টারি চিঠি,
বাজে কথা, কাজের তর্ক, নানান খিটিমিটি।
পদ্মাসনের পদ্মে দেবী লাগান মোটরচাকা,
এমন দৌড় মারেন তখন মিথ্যে তাঁরে ডাকা।
ভাঙা ধ্যানের টুকরো যত খাতায় থাকে পড়ি;
অসমাপ্ত চিন্তাগুলোর শূন্যে ছড়াছড়ি।।

সত্যযুগে ইন্দ্রদেবের ছিল রসজ্ঞান,
মস্ত মস্ত ঋষিমুনির ভেঙে দিতেন ধ্যান-
ভাঙন কিন্তু আর্টিস্টিক; কবিজনের চক্ষে
লাগত ভালো, শোভন হত দেব্তাদিগের পক্ষে।
তপস্যাটার ফলের চেয়ে অধিক হত মিঠা
নিষ্ফলতার রসমগ্ন অমোঘ পদ্ধতিটা।
ইন্দ্রদেবের অধুনাতন মেজাজ কেন কড়া-
তখন ছিল ফুলের বাঁধন, এখন দড়িদড়া।।

ধাক্কা মারেন সেক্রেটরি, নয় মেনকা-রম্ভা-
রিয়লিস্টিক আধুনিকের এইমতোই ধরম বা।
ধ্যান খোয়াতে রাজি আছি দেবতা যদি চান তা-
সুধাকান্ত না পাঠিয়ে পাঠান সুধাকান্তা।
কিন্তু, জানি, ঘটবে না তা, আছেন অনিল চন্দ-
ইন্দ্রদেবের বাঁকা মেজাজ, আমার ভাগ্য মন্দ।
সইতে হবে স্থূলহস্ত-অবলেপের দুঃখ,
কলিযুগের চালচলনটা একটুও নয় সূক্ষ্ম।।

১৫ পৌষ, ১৩৪৫