(বেয়াই) কুটুম্বিতের স্থলে, বউ দেবোনা ব’লে,
বেশি কসাকসি ভাল নয়;
(বিশেষ) বউমাটি দিনরেতে, কাঁদেন নাইতে খেতে,
আহা! বালিকা, তার কত সয়!
তবে কিনা, ভাই, তুল্লে যখন কথা,
দায়ে প’ড়ে একটু দিতে হ’চ্ছে ব্যথা,
(তোমার) ব্যাভার মনে হ’লে, শরীরটে যায় জ্ব’লে,
ঝক্মারি ক’রেছি মনে হয়।
এসেছিল ছেলের দু’ হাজার সম্বন্ধ,
নেহাৎ পোড়ারমুখো বিধাতার নির্ব্বন্ধ,
নেশা খেয়ে কল্লেম এই বিয়ে পছন্দ,
গুক্খুরি ক’রেছি অতিশয়,
তোমার মতন জোচ্চোর, বদ্মায়েস, বাট্পাড়,
দম্বাজ, এ দুনিয়ায় দেখিনিকো আর!
এত কথাবার্ত্তা সবই ফক্কিকার,
কুলের দোষের ওটা পরিচয়।
আগে যদি জান্তেম এমনতর হবে,
পাওয়া থোয়ার দফায় শূন্যি প’ড়ে যাবে,
ক’ত্তে যাই কি এমন আহাম্মকি তবে,
ফে’লে ভাল কাৰ্য্য সমুদয়?
আগে জান্লে পরে, বেড়ে দেখে শুনে,
নিতাম ফর্দ্দের মত কড়ায় গণ্ডায় গুণে,
(এখন) শঠের পাল্লায় প’ড়ে পুড়ি মনাগুনে,
কি ঘোর কলির হয়েছে উদয়।
(তোমার) খাটে পুডিং দে’য়া, তোষক গদি খাটো,
টেবিল, চেয়ার হাল্কা, তক্তপোষ্টি ছোট,
কলসী ঘটী দু’টো, বেজায়-রকম ফুটো,
‘সেকেণ্ডহ্যাণ্ড’ জিনিস সমুদয়;
বাঁধা হুঁকো ভাঙ্গা, শাল জোড়াটা রো’গো,
আল্না, বাক্স, ডেক্স, সবি মড়া-খে’কো,
এখানকার সমাজে, বে’র করিনে লাজে,
পাছে কাণ-মলা খেতে হয়।
এ সব ত’ ধরিনে হ’ক্গে যেমন তেমন,
বাছার চেন ছড়াটি হয়’নি মনের মতন,
সাড়ে চৌদ্দভরি দিলাম ফর্দ্দে ধরি,
ওজনে এক ভরি কম্তি হয়,
(আর) আন্তেই চায়ের সেট্টি পেয়ে গেছে গয়া,
ছিঁড়েছে মশারি, খাটের গেছে পায়া,
(এমন) চ’খের পর্দ্দা-শূন্য বেহদ্দ বেহায়া,
(আর) আছে কিনা, সন্দ সে বিষয়!
গয়না দেখেই গিন্নীর অঙ্গ গেছে জ্ব’লে,
একশ’ ভরির কথা স্বীকার হ’য়ে গেলে,
ষোল টাকা ভরির সোণা সবাই বলে,
পিতল কি সে সোণা, চেনা দায়;
সেই পিতলে আবার আধাআধি খা’দ,
ওজন ক’রে পেলাম ভরি দেড়েক বাদ,
চন্দ্রহার ছড়াটা, নয়কো ডায়মণ্ড কাটা,
কত বল্ব, পুঁথি বেড়ে যায়!
হীরের আংটী কোথা? ঝুঁটো মতি দেয়া!
(এসব) বিলিতি জোচ্চুরি কোথায় শিখ্লে ভায়া?
পয়সার মমতায়, না কল্লে মেয়ের মায়া,
(ও তার) দিবানিশি কথা শুন্তে হয়,
নগদটাতেও রকম-ফেরি আছে, ভাই,
হাজারে দু’তিনটি মেকি দেখ্তে পাই,
বিশ্বাস ক’রে তখন বাজিয়ে নেই নি, তাই-
এম্নি ক’রেই আক্কেল দিতে হয়!
(কন্যার পিতার অশ্রু-মোচন)
বাপ, বেটীরই দেখ্ছি সাধা চোখের জল,
মনে ক’র্লেই ধারা বহে অবিরল,
তবু হয়নি শেষ; মেয়েটিও বেশ,
নাইক’ লাজ লজ্জা সরম ভয়;
(আর) তোমার মতন অষ্টাবক্র, হায়রে বিধি!
তারি কন্যা, কতই হ’বে রূপের নিধি!
রূপে গুণে সমা, লোকে বলে “ওমা,
এমন চাঁদেরো এমন পেত্নী হয়!”
(তোমার) মায়াকান্নায় কিছু আসে যায় না আমার,
(আমি) বেশ বুঝেছি তুমি ভদ্র-বেশী চামার,
বাইরে যত জাঁক-জমক জুতো, জামার;
কিন্তু তুমি অতি নীচাশয়;
বারণ ক’ওে চাইনে, যাওহে মেয়ে নিয়ে,
রেখে যেয়ো আবার খরচ পত্র দিয়ে,
নইলে জেনো, চাঁদের আবার দিবো বিয়ে;
শুনে কান্ত অবাক্ হ’য়ে রয়!
মূলতান- একতালা।