ভেসে যাই

(আমি) পাপ-নদী-কূলে, পাপ-তরুমূলে,
বাঁধিয়াছি পাপ-বাসা;
(শুধু) পাই পাপ-ফল, খাই পাপ-জল,
মিটাই পাপ-পিয়াসা।
(দেখ) পাপ-সমারণে, পাপ-দেহ-মনে,
আনিয়াছে পাপরোগ;
(আবার) পাপ-চিকিৎসায়, ব্যাধি বেড়ে যায়,
ভুগিতেছি পাপভোগ।
(আমি) বাহি’ পাপতরী, পাপের নগরী,
পাপ-অর্থলোভে খুজি;
(করি) পাপের আশায়, পাপ-ব্যবসায়,
লইয়া পাপের পুঁজি।
(আমি) বেচি কিনি পাপ, করি’ পাপ-লাভ,
পাপ-মূলধন বাড়ে;
(আর) করিয়া সঞ্চিত, পাপ পুঞ্জীকৃত,
(হ’লাম) পাপ-ধনী এ সংসারে।
(হায়) পাপের জোয়ারে, পাপ-জল বাড়ে,
পাপ-স্রোত বহে খর;
(কবে) পাপের সংসার, ক’রে ছারখার,
গ্রাসে নদী পাপ-ঘর!
(ওই) শুধু ধুপ্‌ ধাপ্‌, পড়িতেছে চাপ,
ভয়ে নিদ্ৰা নাই চোখে;
(ভাবি) কবে নদী এসে বাসা ভাঙ্গে, ভেসে
যাই কোন্ আঁধার লোকে!
(প্রভু) শুনিয়াছি, তুমি দৃঢ় পুণ্যভূমি,
সাজায়ে রেখেছ দূরে;
(ওহে) পাপ-নদী যার বাসা ভাঙ্গে, তার
স্থান আছে সেই পুরে।
(ওহে) হতাশের আশা, দিবে কি না বাসা,
(সেই) অভয় নগরে তব;
(আছি) আঁধারে একাকী, পাব না দেখা কি?
দিবে না কি কৃপা-লব?
(ওহে) প্রভু, ভগবান্! এক বিন্দু স্থান
দিও চির-স্থির দেশে;
(যদি) কর নির্ব্বাসিত, ওহে বিশ্বপিতঃ!
(তবে একেবারে যাই ভেসে!

মনোহরসাই- জলদ একতালা।