কাল-মৃত্যু

গুরু মেঘভার অবনী নিথর
ঘন তমসার কাজল বক্ষে,
একি ধীরে ধীরে উঠিতেছে ঘিরে
সংশয় সংকেত আপনার অলক্ষ্যে!
দ্বিধা, ভীতি, ক্রোধ কম্পিত অভিশাপে,
জাগিয়া উঠিছে ক্ষুধিত মায়ের স্তনে-
একি বিষ জ্বালা মহা দুঃসহ তাপে!
যুগ যুগ হত নিপীড়িত আত্মার ক্রন্দনে।

এ বায়ু আকাশ এই শ্যাম বনপথ,
মাধবী সন্ধ্যা, এই নদী প্রান্তরে,
একি উত্তপ্ত শ্বাস! বহিছে শ্লথ
মহা ইতিহাস; অভিশপ্ত অন্তরে।
জীর্ন ইতিহাসের ঝরে পড়া বানী
আজি মাগিছে আশ্রয় দুয়ারে,
শতবর্ষ ধরি এ মহাভার টানি,
ক্লান্ত বিবশ পদে পৌঁছিনু সাগরে।
তবু বিদীর্ন হাহাকারে ওঠে জাগি
ইতিহাসের কোন হতে একটি অবহেলিত ধ্বনি,
এ মাটির মধু পরশের বৃথা বাসনা মাগি,
যুগ যুগ ধরি’ চলিয়াছে প্রহর গনি।

বিপ্লব আসি ছিল হুহুংকারে-
বিদ্রোহী সুর বাজায়ে মাদল তানে,
জাগ্রত চেতনা লয়েছে সকল আপনার অধিকারে,
মোর যত সুখ হারায়ে গিয়েছে বিস্মৃতির টানে।
সবে করি নিল ঠাই ঐশ্বর্য গুনে,
ইতিহাসের অধ্যায় জুড়ে স্বর্ন অক্ষরে।
আমার লাগিয়া রচি’ গেলো স্রোত বানে
আপনার কাল-মৃত্যু অজ্ঞাত স্বাক্ষরে।