ইন্দ্রজাল

শূন্য ভুবনে ছাউনি এ কার?
ছায়া পড়ে কার গগন-ভালে?
রিক্ত দ্যুলোক ভরিয়া উঠিল
কোন্ দেবতার ইন্দ্রজালে।

নিকষ-পাষাণ কান্ত-লোহায়
নিঙাড়িয়া গড় গড়িল কে রে?
হাওয়ার উপরে পুরী পত্তন,
নয়ন বচন অবাক হেরে!

বারুদ-বরণ মেঘের বুরুজ
সীসার বরণ কোমর-কোঠা,
মোরচা-বন্দী মেঘ-গঞ্জীনে
ঝলসিছে মুহু জলুসী টোটা!

ত্রাস-দস্যুর ত্রি-অরুণ আঁখি
ফিরে কি আবার ত্রিলোক শোষে?
কাহারে দলন করিতে দেবতা
বাহিনী সাজান জ্বলিয়া রোষে?

আড়-বাঢ় আর ঘাঁটি মুহড়ায়
‘হাঁকার’ বাজায় দামামা কাড়া,
হের দেখ কার বিপুল বাহিনী
হামার হয়েছে পাইতে ছাড়া!

জোড়া-আয়নাতে কি খবর চলে?
বিজুলী কি আনে?… নিকাশী চিঠি
তীরবেগে যত বীর বাহিরিল
ছর্‌রা ছুটিল ঝলসি দিঠি!

বখেড়িয়া উনপঞ্চাশ হাওয়া
ক্ষেত রোকে আর বখেড়া করে,
তোড়ে তোড়াদার বন্দুকে আর
লব্‌লবি টেনে ধোঁয়ায় ভরে!

কালো বারুদের নস্য টানিয়া
কাল-হাঁচি হাঁচে কামান নভে,
যোজন-পাল্লা গোলা উগারিয়া
ভরে দশদিক ভীষণ রবে!

মেঘের সঙ্গে মেশে দূর বন
ঝাপটে দাপটে পালট খেয়ে,
ত্রাহি ত্রাহি ডাকে ত্রাস-দস্যুটা,
শোষণ-অসুর পালায় ধেয়ে!

দেবতার মুখে হাসি ফোটে ফিরে
সোমরসে-ভিজা শ্মশ্রুতটে,
দাড়ান ইন্দ্ৰ ইন্দ্রধনুটি
লম্বিত করি’ আকাশ-পটে!

ঐরাবতেরে অঙ্কুশ হানি
ঐন্দ্রজালিক লুকান হেসে,
মুগ্ধ মানব স্নিগ্ধ ধরণী
নিবেদিছে প্রীতি দেবোদ্দেশে।