এমন কেন হয় না?

শুদ্ধতার সরোবরে ডুবসাঁতার কেটে
এইমাত্র উঠে এলে তুমি, তোমার
সত্তার অপরূপ তীক্ষ্ণ নগ্নতা থেকে ঝরছে জলের
স্বচ্ছ রূপোলি ফোঁটা উৎসুক ঘাসমাটিতে।

যেসব কদাকার বৃশ্চিক আমার হৃদয়ের
তন্তুগুলো আহার করে
বেঁচে থাকে কর্কশ নধরতায়, তুমি তাদের কাল রাত্তিরে
তোমার শৈল্পিক আঙুলে
তুলে নিয়ে ছুঁড়ে দিয়েছ কবরস্তানে। আমার
অন্তর্গত ক্ষত সযত্নে ধুইয়ে দিয়েছ শুদ্ধতার শিশিরে।

কাল রাত্তিরে তুমি আমাকে সবচেয়ে বেশি
ভালোবেসেছ; কাল তুমি এমন কিছু উচ্চারণে
আমাকে আলোকাবৃত করেছ যা,
শোনার আকাঙ্ক্ষায় আমি শতাব্দীর পর শতাব্দী
প্রতীক্ষায় ছিলাম। কাল নিশীতে বালিশে
মুখ চেপে তোমাকে আবৃত্তি করতে করতে ভালোবাসার মাতৃভাষায়
যখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, তখন দূর থেকে
কয়েকটি নক্ষত্র দেখছিল আমাদের দু’জনের ঘুমের স্তব্ধতা।

এমন কেন হয় না, সব সময় দেখতে পাচ্ছি
তোমাকে? তুমি আমার সামনে লঘু পায়ে
ঘোরা ফেরা করছ স্যুইচ টিপছ আলো-হাওয়ায়,
চুল আঁচড়াচ্ছ ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে,
শাড়ি পরছ, খুলছ ব্লাউজের হুক, আমার পাশে বসছ নিবিড়,
আমার আঙুল নিয়ে খেলা করছ, কখনো করছ
মুখ চুম্বন, কখনো আমার মাথা টেনে নিচ্ছ কোলে, কখনো-বা
তোমার চুলের ঝর্নাধারায় ঢেকে দিচ্ছ আমার মুখ-কেন এমন হয় না?
কেন এমন হয় না, ইচ্ছে করলেই তোমাকে ছুঁতে পারি
যে-কোনো সময়? ইচ্ছে হলেই তোমাকে নিয়ে
বেরিয়ে পড়তে পারি, নির্জনতাকে সাজাতে পারি নান্দনিক
যুগ্মতায়? এই মুহূর্তে তোমার যুগল স্তন উৎকর্ণ হয়ে
শুনছে আমার হৃদস্পন্দন, সেই ধ্বনিপুঞ্জে
তোমার নাম ঢেউ হয়ে নেচে উঠছে কি না, তা’
যাচাই করে নিতে আর আমি তোমার সুবর্ণ উরুর শোভা
দেখা আর চুমোর সুঘ্রাণের স্মৃতি আউড়ে চলেছি।

২৫.৯.৯৪