আমি যে সর্বস্বে দেখি

তুমি কি গতকাল ভোরে ধানমণ্ডি হ্রদের স্তরে স্তরে
বিন্যস্ত ঢেউয়ের সবুজ সিঁড়ির ধাপে ধাপে পা ফেলে আনমনে
হেঁটে গিয়েছিলে?
-না-
গতকাল দুপুরে তুমি কি শহর পেরিয়ে গিয়ে দিগন্তপারের
সব গাছ, তৃণ, লতা, গুল্ম, প্রতিটি পল্লব
ছুঁয়েছিলে- যেমন আমাকে ছোঁও- তোমার ওই দীর্ঘ শ্যামল আঙুলে?
-না-
তুমি কি মধ্যাহ্ন বৃষ্টির পর গতকাল আকাশের এপারেওপারে
টাঙানো রঙধনুতে ঝুলিয়ে দিয়েছিলে
তোমার শরীরের রঙে ঝলমল করা একান্ত ব্যক্তিগত শাড়ি?
-না-
তুমি কি গতকাল পদ্মার পশ্চিম প্রান্তে নারকোল বনের আড়ালে
টেনে এনে ওই লাল তীব্র ঠোঁটে চুমো খেয়েছিলে
সূর্যাস্তকে?
-না-
তুমি শুধু বলো না-না-না-না;
কিন্তু আমি যে সর্বস্বে দেখি তোমাকেই।
ধানমণ্ডি হ্রদে যদি তুমি না-ই গিয়ে
থাকো তবে আমি কেনো ওই জলধির ঢেউয়ের সিঁড়িতে সিড়িতে
দেখি তোমার পায়ের দাগ? শহর পেরিয়ে যদি না-ই গিয়ে
থাকো তুমি দিগন্তপারের বৃক্ষের প্রান্তরে
তাহলে সেখানে কেনো লেগে আছে তোমার ত্বকের
একান্ত শ্যামল বর্ণ? রঙধনুতে তোমার শাড়ি না ঝুললে কেনো আমি
ওই সাতরঙে অত্যন্ত স্পষ্ট দেখি একটি অষ্টম রঙা?
আর যদি তুমি চুমো না-ই খেয়ে থাকো সূর্যাস্তকে,
তবে তার সারা মুখে ভ্যানগগের তুলির
বিশাল পোচের মতো কেনো লেগে ছিলো তোমার ঠোঁটের
গাঢ়-ভেজা লাল রেভলন?