সে বসে পড়িছে বই

শুইয়া সে পড়িতেছে বই-
এ ঘরেতে আর কেহ কোথা নাই শুধু এই আমি বই।
খণ্ড রোদের টুক্রো আসিয়া পড়েছে তাঁহার মুখে;
-রাঙা মুখে হাসি, তারি ঢেউ লেগে দুলিতেছে তারা সুখে।
খানিক সে পড়ে, খানিক আবার চায় মোর মুখ পানে,
আমি কবিতায় বৃথা মালা গাঁথি বুঝাইতে তার মানে।
তাঁহার চাউনী, দুটী কালো চোখে, যেন দুটী কালো অলি,
হেলিয়া দুলিয়া দু’পায়ে দলিছে মুখের কমল-কলি।
তার ডানাখানি মোর গাঁয়ে লাগা, বিজলীর লতা এসে,
বুঝি ক্ষণকাল বিরাম মাগিছে আমার মেঘের দেশে।
বই সে পড়িছে, কি বই জানিনে, কে জানে কি আছে লেখা,
আমি দেখিতেছি খনে খনে তার মুখেতে হাসির রেখা।
তার রাঙা মুখে হাসি দুলিতেছে, সে হাসির সরোবরে,
দুই গালে দুটো রাঙা রাঙা টোল ফুটীতেছে লীলাভরে।
সেই রাঙা টোলে ভ্রমর বসিত, অথবা দুইটি ফুল,
দুই গালে কেউ বেধে দিয়ে যেতো মিছেমিছি করি ভুল।
না-রে না, ও মুখে যত হাসি ঝরে, আর যত রূপ ঝরে,
হয় ৎ তাহাই গড়ায়ে গড়ায়ে দুটী টোল যাবে ভরে।
তার রাঙা মুখ- তার রাঙা হাসি, সে বসে পড়িছে বই,-
এ ঘরেতে আজ আর কেহ নাই এই একা আমি রই।