আজ

কেবলি আরেক পথ খোঁজো তুমি; আমি আজ খুঁজি নাকো আর;
পেয়েছি অপার শুন্যে ধরবার মতো কিছু শেষে
আমারই হৃদয়ে মনে: বাংলার ত্রস্ত নীলিমার
নিচে ছোটো খোড়ো ঘর- বনঝিরি নদী চলে ভেসে

তার পাশে; ঘোলা ফর্সা ঘূর্ণি জল অবিরল চেনা পরিজনের মতন;
কখনো বা হ’য়ে আসে স্থির;
মাঠ ধান পানবন মাছরাঙাদের আলোড়ন
আলিঙ্গন করে বিছিয়েছে তার নারীর শরীর।

ঘরে কোনো লোক নেই- কয়েকটি গ্রন্থ তবু আছে;
রয়েছে পরম ছবি- চার জন-পাঁচ জন একান্ত শিল্পীর:
ফ্রান্সের ইটালির বাংলার কাঙড়ার;- নিম জাম নাগেশ্বর গাছে
রয়েছে অগণ্য সব পাখিদের নীড়।

তবুও মনকে ঘিরে মহাজাগতিক আলোড়ন
আর এই পৃথিবীর অন্তহীন দ্বিধা দ্বেষ প্রেম সংগ্রাম
আমাদেরো রক্ত দিয়ে আদি রক্তবীজের নিধন
চেয়েছে,- মিটিয়ে দেবে ষোলো আনা দাম।

এই শতকের দিন ক্ষয় হ’য়ে এলো প্রায় আজ;
নবীন আশার বার্তা নীল নিরালম্ব শূন্যে ভেসে
মানুষ যা চেয়েছিলো সেই নারী সেই সূর্য আর সে সমাজ
দেবে- তার আত্মঘাতী রণাঙ্গন একদিন স্তব্ধ হ’লে শেষে।

আনন্দবাজার পত্রিকা। ১৪ কার্তিক, ১৩৬১