এই স্থূল হস্ত

‘আমি এই স্থূল হস্ত অবলেপ চাই নাই
তুর্মলী’র মতো নীল আমার আকাশে
আমার নদীর জলে- তুরস্ক-মণির মতো আমার পবিত্র দূর রৌদ্রের সাগরে-‘
অর্বুদ যুগের শেষে দেয়ালের বৃত্ত থেকে বলে কৃকলাস
উজ্জ্বল সোনার মতো আগুন করে না তারে গ্রাস
শিশিরের মতো শব্দে মাথার চাঁদিনি ঘিরে নড়ে
মোমের আলোর মতো সঙ্কুল চিবুক
ঈশ্বরীর মতো তার মুখ
করুণ দুধের ক্বাথে আজও তার ভ’রে আছে বুক
তবু করতালি দিয়ে আমার চোখের দিকে চেয়ে
করিল সে রূঢ় পরিহাস
লন্ডন, বেবিলন, উর
আমার হৃদয় যেন ভয়াবহ প্রগাঢ় মুকুর
পারাহীন- প্যারাফিন-দৃষ্টিপাতহীন
অনাদির অন্ধকারে অত্যন্ত স্বাধীন
আমার কঙ্কাল থেকে চারি-দিকে চাঁদের আলোয়
বেজে ওঠে মানুষের সাথে এক দানবীর
গোপনীয় নিদ্রার সুর
গম্বুজের মতো দীপে
হলুদ তুলট পাতা যেই গল্প বলে
মাথায় গাধা’র টুপি এঁটে নিয়ে যে-ভূমিকা শুরু করে ভাঁড়
নক্ষত্রেরা টেনে নেয় অশিষ্ট অসীম করতলে
আমার হৃদয়ে আছে বেরিন-মণির মতো সেই অন্ধকার
আঙুল ঘুরায়ে দিয়ে শূন্যের পরে
ঢুকে গেল মনোরম অগ্নির ভিতরে
পাছে এই পৃথিবীর ছাগলেরা
কিংবা বিড়ালাক্ষ-আলো দেখে ফেলে তারে
লুপ্ত হয়ে গেল অন্ধকারে
দূর শ্বেতবর্ণ হাতি অন্ধকার মসৃণ বাতাসে
হাতি’র দাঁতের মতো ধূমা হয়ে ভাসে
অনেক উজ্জ্বল তারা রোল ক’রে ঘুরিতেছে দেখে
দৃশ্যমান লোকালয়ে তুষের মতন নিভে আসে।