মৎস্যগন্ধা

আবার পাবে না ফিরে এই দেহ মহাশ্বেতা… মৎস্যগন্ধা… তুমি-
আসিবে না ফিরে আর পৃথিবীতে;- পৃথিবীর বরং এ-মেদের সমুদ্রে (মৎস্যগন্ধা)!
যা হয়েছে প্রগাঢ় ভোরের রঙে শরীর তা পেয়েছিল!
ক্ষুধা চেয়েছিল তাহা- মোমের মেদের গর্ভে সলিতার মতো এক ফিতা
যেই আভা ধার ক’রে নিয়ে আসে- তারই স্বাদে বুঝেছ এ-পৃথিবীর সৌন্দর্যেরে
ছড়ায়েছ ঐশী ভাইটামিন-হীন- এই মৃত্তিকার তরঙ্গের রূপ
(মৎস্যগন্ধা- মহাশ্বেতা;)- ইলেকট্রোন, প্রোটোন ও প্রোটিনের সাথে খেলে গেছ;
খেলে গেছ সৃজনের জ্যামিতির সাথে;- এক বার গণিতের শিক্ষকের মতো (সবই স্বাদ, গাঢ় স্বাদ)
তরাসে শিশুর মতো ক্রূর বীজগণিতের সাথে আর এক বার
আবছায়া গহ্বরের থেকে উঠে ইন্দুর যেমন খেলে;- আঁশটে ঘ্রাণের সাথে ট্যাংরার
কোথাও ঝাঁপির কী; সোনার ধানের মরাইয়ের- কার্তিকের চাঁদের
কাস্তের মতো বাঁকা চাঁদের জ্যোৎস্নায়;- যেন কোনও দানবীয় রূপসির ভ্রূকুটির কুয়াশার
জীবনের ঝির্ঝির অলীক ইঁদুর-স্বাদ;- ধূসর পেঁচার রং তবু তার পর
বিমর্ষ রেখার-পর-রেখা দিয়ে ভরা;- মোম-গন্ধে করাতের দাঁতের মতন
সূর্যের অগ্নির মতো আকস্মাৎ; বড় গোল সূর্যের তামাটে ঘুসির মতো
মৎস্যগন্ধা, মহাশ্বেতা,- আবার পাবে না ফিরে এই দেহ
পেঁচার পেটের পথে ইঁন্দুরের মাংস হয়ে গেছে
অন্য পথে চ’লে গেছে সলিতার আভা
মাংস নয়;- প্রোটোনেরে ঠেলে ফেলে- ইলেকট্রোন-শুয়ারেরে লাথি
ক’ষে মেরে- যদিও ভেঙেছে চিমনি- নিভে গেছে বাতি
গভীর সে-বিভা অই দূর শূন্যে বৈজ্ঞানিক-সঙ্গহীন চোলাইয়ের সাথে
প্রোটিনের ডিম আর পাঁপড়ের গন্ধ রেখে পৃথিবীর হাতে
আমাদের নাকে রেখে মৎস্যগন্ধ, মাংসহীন শূন্য হ’তে আরও শূন্যতর
মিশে গেছে;- ফিরে আর আসিবে না আমাদের মেদের ভিতর
ইলেকট্রোন অশরীরী জাল ফেলে পারিবে না আর
ফিরায়ে আনিতে সেই দু’টি মাছ:
আরও আভা- আরও দ্যোতনার।