শেষের গান

আমার বিদায়-রথের চাকার ধ্বনি ঐ গো এবার কানে আসে।
পুবের হাওয়া তাই কেঁদে যায় ঝাউয়ের বনে দিঘল শ্বাসে।।

ব্যথায় বিবশ গুলঞ্চ ফুল
মালঞ্চে আজ তাই শোকাকুল,
মাটির মায়ের কোলের মায়া ওগো আমার প্রাণ উদাসে।।

অঙ্গ আসে অলস হয়ে নেতিয়ে-পড়া অলস ঘুমে,
স্বপন-পারের বিদেশিনীর হিম-ছোঁওয়া যায় নয়ন চুমে।
হাতছানি দেয় অনাগতা,
আকাশ-ডোবা বিদায়-ব্যথা
লুটায় আমার ভুবন ভরি বাঁধন ছেঁড়ার কাঁদন-ত্রাসে।।

মোর বেদনার কপূর্র-বাস ভরপুর আজ দিগ্বলয়ে,
বনের আঁধার লুটিয়ে কাঁদে হরিণটি তার হারার ভয়ে।
হারিয়ে-পাওয়া মানসী হায়
নয়ন-জলে শয়ন তিতায়,
ওগো, এ কোন জাদুর মায়ায় দু’চোখ আমার জলে ভাসে।।

আজ আকাশ-সীমায় শব্দ শুনি অচিন পায়ের আসা-যাওয়ার,
তাই মনে হয় এই যেন শেষ আমার অনেক দাবি-দাওয়ার।
আজ কেহ নাই পথের সাথী,
সামনে শুধু নিবিড় রাতি,
আমায় দূরের বাঁশি ডাক দিয়েছে, রাখবে কে আর বাঁধন-পাশে।।

[কলিকাতা
শ্রাবণ ১৩২৮]