পত্র

শ্রীমতী ইন্দিরা। প্রাণাধিকাসু।

স্টীমার। খুলনা।

বসে বসে লিখ্‌লেম চিঠি
পুরিয়ে দিলাম চারটি পিঠ-ই,
পেলেম না তার জবাব-ই
এম্‌নি তোমার নবাবী!

দুটো ছত্র লিখ্‌বি পত্র
একলা তোমার “রব্‌-কা” যে!
পোড়ার মুখী তাও হবে না
আলিস্যি তোর সব কাজে!
ঝগড়াটে নয় স্বভাব আমার
নইলে দেখতে কারখানা,
গলার চোটে আকাশ ফেটে
হয়ে যেত চারখানা,
বাছা আমার দেখতে পেতে
এই কলমের ধার খানা!

তোমার মতো এমনি মা তো
দেখি নি এ বঙ্গে গো,
মায়া দয়া যা-কিছু সে
য দিন থাকে সঙ্গে গো!
চোখের আড়াল প্রাণের আড়াল
কেমন তরো ঢঙ এ গো!
তোমার প্রাণ যে পাষাণ সম
জানি সেটা long ago!

সংসারে যে সবি মায়া
সেটা নেহাৎ গল্প না!
বাইরেতে এক ভিতরে এক
এ যেন কার খল-পনা!
সত্যি বলে যেটা দেখি
সেটা আমার কল্পনা!
ভেবে একবার দেখো বাছা
ফিলজফি অল্প না!

মস্ত একটা বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ
কে রেখেছে সাজিয়ে,
যা করি তা কেবল “থোড়া
জমির বাস্তে কাজিয়ে!”
বৃষ্টি পড়ে চিঠি না পাই,
মনটা নিয়ে ততই হাঁপাই,
শূন্যে চেয়ে ততই ভাবি
সকলি ভোজ-বাজি এ!
ফিলজফি মনের মধ্যে
ততই ওঠে গাঁজিয়ে!

দূর হোক্‌ গে, এত কথা
কেনই বলি তোমাকে!
ভরা নায়ে পা দিয়েছ,
আছ তুমি দেমাকে!

তোমার সঙ্গে আর কথা না,
তুমি এখন লোকটা মস্ত,
কাজ কি বাপু, এই খেনেতেই
রবীন্দ্রনাথ হলেন অস্ত।