অস্বীকৃত তোমার মৃত্যু

পথ ছিল জলশূন্য, সুনসান, ছায়ারা
চেটে নিচ্ছিল ধুলো, বৃক্ষেরা নির্বাক,
অথচ কাহিনী বর্ণনায় উন্মুখ। একা তুমি
অনেক দূর হেঁটে এসে
দাঁড়ালে পথের মোড়ে। তোমার পদ চুম্বন করল
ঝরা পাতা, ফুলের পাপড়ি, রৌদ্রধারা।

কী ছিল তোমার আহ্বানে,
কোন্‌ সেই ইন্দ্রজাল,
জানা ছিল না।
দেখতে-দেখতে বিরান পথ
হ’য়ে ওঠে জনবহুল। সবার মুখ
তোমারই দিকে উন্মীলিত সূর্যমুখী।

কাতারে কাতারে দাঁড়ালাম আমরা,
সজীব বসন্ত অভিবাদন
জানালো আমাদের ইতিহাস
তোমার ইঙ্গিতে নতুন বাঁক নিলো,
আমরা মুগ্ধ চোখে দেখি,
বহু যুগের বন্ধ দরজা যায় খুলে।

হঠাৎ এক খন্ড কালো মেঘ
ঠাণ্ডা হিংস্রতায় ঢেকে ফেলে তোমাকে।
তোমার নিষ্প্রাণ দেহের সামনে শোকার্ত হৃদয়ে
আমরা দাঁড়ালাম নত মাথায়,
তোমাকে অর্পণ করলাম
ফুলের স্তবক আর প্রতিশ্রুতি।

মনে পড়ল আলোর ঝর্নার মতো
তোমার অঙ্গীকার,
বিদ্যুতের মতো তোমার শপথ,
অন্ধকার রাতে পূর্ণিমার মতো
তোমার বরাভয়।
শোকের মুহূর্তের স্পন্দিত বুকে ধ্বনিত বিজয়-গান।

অস্বীকৃত তোমার মৃত্যু বাংলার মানুষের কাছে;
কেননা, তারা জানে তুমি বেঁচে থাকবে
বসন্তের ফুলসম্ভারে,
তুমি বেঁচে থাকবে তাদের শপথ উচ্চারণে,
তুমি বেঁচে থাকবে মানবিক ভালাবাসায়,
তুমি বেঁচে থাকবে কবির নাক্ষত্রিক পঙ্‌ক্তিমালায়।

১৮/৭/৯৫