রোদনের স্মৃতি

তোমাকে চোখের মধ্যে রেখে কাঁদি, আমার দু-চোখে তুমি
বিগলিত ঠাণ্ডা হিম, তুমি কাঁদছো, দু-চোখের একান্ত ভেতরে
গ’লে যাচ্ছে কালো আঁখিতারা, গ’লে গ’লে একটি গাছের মতো
সবুজ, তোমার মতোন করুণ হয়ে যাচ্ছে অশ্রুমালা

তুমি নিথর নিরীহ দাঁড়িয়ে আছো আঁখিতারার ভেতরে,
তুমি, একাকিনী সবুজ পল্লব, কাঁপছে বাতাসে শাদা হিমে
ভিজছো অক্টোবরের সন্ধ্যার কুয়াশায় ক্রিমে
আমার বধির দুই চোখের মণিতে ব্যথিত রোদন হয়ে গেঁথে আছো তুমি

কাঁদছে তোমার চুল, ঘনকালো, কাঁপছে তারার মতো দু-কানের দুল
লাল টিপ নরম নিরীহ শান্ত সরল রিস্টওয়াচ, পায়ের আঙুলে
মাটি খুঁড়ে নিয়ে আসছো ভূমধ্য থেকে সহোদরা শ্যামল রোদন
তারা সব জমে যাচ্ছে আমার চোখের মধ্যে বরফ যেমন

আমার চোখের মধ্যে তুমি ব’সে আছে একফালি অশ্রুময়
থেমে গেছে অঙ্কুরোদ্গম কৃষিক্ষেত্রে জাহাজের ডানা
পাতার নিজস্ব ঘ্রাণ লোকে লোকে সব ঐকতান
আমার চোখের মধ্যে তুমি আমার দু-চোখ অন্ধ বোবা ম্লান

সেই থেকে অন্ধ হয়ে আছি নিজ আঁখিতারা গলিত অশ্রুতে
দেখি না কিছুই চরাচর নক্ষত্র সমুদ্র জলযান
দেখি না নিজেকে কররেখা নিজ ছায়া কিছুই দেখি না
আমার দু-চোখে অক্টোবরের গাঢ়সন্ধ্যা
তার মধ্যে নিরবধি কান্না হয়ে তুমি ব’সে আছো