গৃহলক্ষ্মী

নবজাগরণ-লগনে গগনে বাজে কল্যাণশঙ্খ-
এসো তুমি উষা ওগো অকলুষা, আনো দিন নিঃশঙ্ক।
দ্যুলোকভাসানো আলোকসুধায়
অভিষেক তুমি করো বসুধায়,
নবীন দৃষ্টি নয়নে তাহার এনে দাও অকলঙ্ক।

সম্মুখ-পানে নবযুগ আজি মেলুক উদার চিত্র।
অমৃতলোকের দ্বার খুলে দিন চিরজীবনের মিত্র।
বিশ্বের পথে আসিয়াছে ডাক,
যাত্রীরা সবে যাক ধেয়ে যাক,
দেহমন হতে হোক অপগত অবসাদ অপবিত্র।

মৌন যে ছিল বক্ষে তাহার বাজুক বীণার তন্ত্র।
নব বিশ্বাসে আশ্বাসহীন শুনুক বিজয়মন্ত্র।
এসো আনন্দ, দুঃখহরণ,
দুঃখেরে দাও করিতে বরণ,
মরণতোরণ পার হয়ে যাই অমর প্রাণের পন্থ।

কল্যাণী, তব অঙ্গনে আজি হবে মঙ্গলকর্ম,-
শুভসংগ্রামে যে যাবে তাহারে পরাও বীরের বর্ম।
বলো সবে ডাকি “ছাড়ো সংশয়”,
বলো যাত্রীরে “হয়েছে সময়,”
বলো “নাহি ভয়”, বলো “জয় জয়, জয়ী যেন হয় ধর্ম”।

পশ্চাৎ-পানে ফিরায়ে ডেকো না, মনে জাগায়ো না দ্বন্দ্ব,
দুর্বল শোকে অশ্রুসলিলে নয়ন কোরো না অন্ধ।
সংকট-মাঝে ছুটিবার কালে
বাঁধিয়া রেখো না আবেশের জালে,
যে চরণ বাধা লঙ্ঘিবে তাহে জড়ায়ো না মোহবন্ধ।

বৈশাখ, ১৩৩৪